“চাকার নিচে ঢাকা ঘুমায়, সময় কাঁদে চুপ,
বাসের ভেতর নরক নামে, এ কেমন রূপ!
হর্ন বাজে, ধোঁয়া ওড়ে, ঘামের গন্ধ ভাসে,
প্রতিটি মোড়ে জীবন যেন থমকে আছে ত্রাসে।
লোহার খাঁচায় বন্দি আমরা, সারি সারি মুখ,
ঢাকা শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থা একপ্রকার চলন্ত সার্কাস। বাসগুলো যেন ব্যক্তিগত পার্কিং স্পটে দাঁড়িয়ে, একে অপরের উপর নির্ভরশীল ‘সিস্টেমে’ চলে। পথচারীরা গন্তব্যের বদলে গন্ধব্যে পৌঁছে, কারণ ট্রাফিক আইন এখানে একরকম অলিখিত রসিকতা। বাস থামে যেখানে খুশি, ট্রাফিক পুলিশ দাঁড়িয়ে “ভাংতি আছে?” স্টাইলে অর্থ আদায়ে ব্যস্ত। গালাগাল, গলি আর গরমে গলে যাওয়া এই শহরে বেঁচে থাকা মানেই মানসিক ধৈর্যের পরীক্ষা। কেউ দোষ দেয় সরকারকে, কেউ মালিক বা ড্রাইভারকে, কিন্তু সমাধান নেই। বাংলাদেশে ট্রাফিক ব্যবস্থা যেন পরিকল্পিত বিশৃঙ্খলা—“ড্যামেজড বাই ডিজাইন।” আর তাই এখানে রাস্তায় নামা মানে লাইভ কমেডি শো উপভোগ করা। ভাইরাল হতে হলে এখানে নিয়ম মানার দরকার নেই—গরম রাস্তায় ঠাণ্ডা মাথা নয়, বরং ঘাম দিয়ে রাস্তায় টিকে থাকাই মূল চ্যালেঞ্জ।
ঢাকা শহরের ট্রাফিক – থামো না থামো, সিস্টেম তো ঠ্যাঁ-ই!
একটি বাস-সন্ত্রাস, সিস্টেম-সার্কাস এবং জনগণের গালিভর্তি গল্প
🚦 থেমে থাকা রাস্তায় চলন্ত নাটক :
ঢাকা শহরে রাস্তাগুলো এখন আর পথ নয়—এগুলো “বাস কোম্পানির ব্যক্তিগত পার্কিং স্পট”। এমনকি বাস ড্রাইভারদেরও এখন নিজের বাস কোথায় রেখেছে সেটা মনে থাকে না—কারণ সেই বাসের সামনের বাসটা আগে যাত্রী তুলবে, তারপর সে উঠবে, তার পিছে আবার আরেকটা, তার পিছে তার ছোট ভাইয়ের ছেলের জামাইয়ের মালিকের বাস। সবাই একই কোম্পানির, সবাই একই গন্তব্যের, কিন্তু রেস হচ্ছে আলাদা অক্ষর দিয়ে।
শাহবাগ থেকে শুরু করে মিরপুর ১০ পর্যন্ত সিটি বাসগুলো এখন রাস্তায় আড়াআড়ি ঘুমায়। যেন তারা পুতুলনাচের ঘোড়া—থামছে, ঘুরছে, ঠেলছে, কিন্তু চলছে না!
🚌 গন্তব্যহীন গতি :
বাসগুলো এমন ভাবে থামে, যেভাবে ছাত্ররা একসাথে ঘরে ঢুকে মায়ের কাছে বলে, "আমার কিছুই হয়নি, ওইটা বলবে না মা!"
এক বাস যাত্রী নিচ্ছে রাস্তার একেবারে মাঝখানে দাঁড়িয়ে, ডান লেনে।
পিছে আরেকটা বাস তাকে পাশ কাটিয়ে তার সামনে ঢুকে গেল।
তার পিছে আবার অন্য কোম্পানির "রাজধানী রাজা লিমিটেড" বাস এসে ফস করে দাঁড়িয়ে গেলো এমনভাবে যেন সে এই শহরের শেষ স্টপ।
পথচারীরা গন্তব্যে নয়, গন্ধব্যে পৌঁছে যাচ্ছে, কারণ একদিকে বাসের শব্দ, আরেকদিকে মোটরসাইকেল রিকশা রিকভারি!
💸 ট্রাফিক ভাইয়ের তবলা বাজানো :
এদিকে, ট্রাফিক পুলিশ ভাই দাঁড়িয়ে আছেন চুপচাপ। এক হাতে স্টিক, আরেক হাতে “ভাংতি লাগবে নাকি ভাই?” সিস্টেম।
একদিকে মানুষ চিৎকার করছে—“ভাই, চলেন দেন!”, আর তিনি ব্যস্ত রিকশার পেছনের বক্স খুলে ম্যাজিস্ট্রেটিক মুচকি হেসে বলছেন—
"এইটা তো অফিসিয়ালি কেস দিছি ভাই… দুইশ টাকায় সই দেন।"
গরমে রাস্তা গলে যাচ্ছে, মানুষ গলে গিয়ে তরল হয়ে পড়ছে, কিন্তু ট্রাফিক ভাইয়ের ফিটনেস, ধৈর্য এবং গেটআপ একদম ব্রিটিশ ভিক্টোরিয়ার মতো—হিল ছুঁয়ে দাঁড়িয়ে টাকা নিচ্ছেন, কারনে অকারণে।
😠 গালি ও গলি – দুটোতেই ঠাঁই নাই :
বাসের যাত্রী গালাগাল দিচ্ছে বাস চালককে।
চালক বলছে,
"বস, এইটাই সিস্টেম। আমার পিছে ভাইয়ার বাস। ভাইয়ার পিছে আমার মামার বাস। আমরা একে অপরের ওপর নির্ভর করি!"
মোটরবাইকের চালক দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে জিপিএস চালু করে দেখছে, সে এখন "বনানী" তে না “বাহান্নতে” আছে।
এদিকে একজন রোদে দাঁড়ানো ভদ্র মহিলা বলছেন,
"এই শহরে ভদ্রভাবে বাঁচতে গেলে আগে পাগল হতে হয়।"
📣 কার দোষ বেশি? জনগণের গলা থেকে উত্তর :
“এই সমস্যার জন্য কে দায়ী?”—এই প্রশ্ন করতেই সকলে একযোগে বলে উঠে:
“সবাই!”
কেউ বলে ড্রাইভার, কেউ বলে মালিক, কেউ বলে ট্রাফিক, কেউ বলে সরকার।
একজন দাড়িওয়ালা দাদা বললেন:
"সরকার ভালোই ছিল, শুধু রাস্তা বানিয়ে আমাদের উপর পরীক্ষা চালাইছে।"
📌 বাংলাদেশের সিস্টেম – "ড্যামেজড বাই ডিজাইন"
বাংলাদেশের ট্রাফিক সমস্যার মধ্যে একটা কবিতা আছে, একটা অলস কোরিওগ্রাফি, একটা কাটাকুটি পরীক্ষা।
বাস চলার আগে অন্য বাসকে দেখে থামে, মানুষ রিকশা ছেড়ে হেঁটে যায়, কারণ গন্তব্যে পৌঁছানোর চেয়ে বাস থেকে বাঁচা জরুরি।
এদেশে রাস্তায় নামা মানেই "লাইভ কমেডি শো" দেখা।
🔥 ভাইরাল হতে হলে মাথা ঠান্ডা নয়, রাস্তা গরম থাকতে হয়
আমরা শুধু হাঁসি দিয়ে বলি:
"এই তো বাংলাদেশ! এখানেই সব সম্ভব, কারণ এখানে নিয়ম নয়, ধৈর্য্যই নিয়তি!"
#বাসবাদ #ঢাকার_যন্ত্রণা #ট্রাফিক_কমেডি #সিস্টেমে_সিস্টেম_নাই
বাসের ভেতর নরক নামে, এ কেমন রূপ!
হর্ন বাজে, ধোঁয়া ওড়ে, ঘামের গন্ধ ভাসে,
প্রতিটি মোড়ে জীবন যেন থমকে আছে ত্রাসে।
লোহার খাঁচায় বন্দি আমরা, সারি সারি মুখ,
জানালা দিয়ে দেখি শুধু, ধূসর পথের দুঃখ।
গাড়ি চলে না, জীবন চলে, থমকে আছে সব, সিস্টেমের হাহাকার শুনি, এ কেমন কলরব!
এক ইঞ্চি পথ পেরোতে লাগে যেন যুগ,
স্বপ্নগুলো জ্যামে মরে, আশা হয় ফিকে।
ক্লান্ত চোখ, শুকনো ঠোঁট, একরাশ বিরক্তি,
এ কোন শহর, যেখানে সময় চলে না টিকে?
পিচঢালা পথ যেন এক মস্ত অজগর,
গিলে খাচ্ছে প্রতিটি মুহূর্ত, প্রতিটি প্রহর।
অফিস, স্কুল, বাজার, বাড়ি—সবই যেন দূরে,
গন্তব্যের পথ হারায়, এই জ্যামের ঘোরে।
কন্ডাক্টরের হাঁকডাক, যাত্রীর চাপা ক্ষোভ,
সবকিছু মিশে একাকার, এক অদ্ভুত লোভ।
কখন পৌঁছাবো, কেউ জানে না তার শেষ,
এ যেন এক অনন্ত যাত্রা, জ্যামের দেশ।
সিস্টেমের হাহাকার, কানে বাজে অবিরাম,
এ শহর কি শুধুই জ্যাম আর ধোঁয়ার ধাম?
মুক্তির পথ খুঁজি, পাই না কোনো দিশা,
বাসে চড়ে নরক ভ্রমণ—এ এক কঠিন নেশা।”
ঢাকা শহরের ট্রাফিক ব্যবস্থা একপ্রকার চলন্ত সার্কাস। বাসগুলো যেন ব্যক্তিগত পার্কিং স্পটে দাঁড়িয়ে, একে অপরের উপর নির্ভরশীল ‘সিস্টেমে’ চলে। পথচারীরা গন্তব্যের বদলে গন্ধব্যে পৌঁছে, কারণ ট্রাফিক আইন এখানে একরকম অলিখিত রসিকতা। বাস থামে যেখানে খুশি, ট্রাফিক পুলিশ দাঁড়িয়ে “ভাংতি আছে?” স্টাইলে অর্থ আদায়ে ব্যস্ত। গালাগাল, গলি আর গরমে গলে যাওয়া এই শহরে বেঁচে থাকা মানেই মানসিক ধৈর্যের পরীক্ষা। কেউ দোষ দেয় সরকারকে, কেউ মালিক বা ড্রাইভারকে, কিন্তু সমাধান নেই। বাংলাদেশে ট্রাফিক ব্যবস্থা যেন পরিকল্পিত বিশৃঙ্খলা—“ড্যামেজড বাই ডিজাইন।” আর তাই এখানে রাস্তায় নামা মানে লাইভ কমেডি শো উপভোগ করা। ভাইরাল হতে হলে এখানে নিয়ম মানার দরকার নেই—গরম রাস্তায় ঠাণ্ডা মাথা নয়, বরং ঘাম দিয়ে রাস্তায় টিকে থাকাই মূল চ্যালেঞ্জ।
ঢাকা শহরের ট্রাফিক – থামো না থামো, সিস্টেম তো ঠ্যাঁ-ই!
একটি বাস-সন্ত্রাস, সিস্টেম-সার্কাস এবং জনগণের গালিভর্তি গল্প
🚦 থেমে থাকা রাস্তায় চলন্ত নাটক :
ঢাকা শহরে রাস্তাগুলো এখন আর পথ নয়—এগুলো “বাস কোম্পানির ব্যক্তিগত পার্কিং স্পট”। এমনকি বাস ড্রাইভারদেরও এখন নিজের বাস কোথায় রেখেছে সেটা মনে থাকে না—কারণ সেই বাসের সামনের বাসটা আগে যাত্রী তুলবে, তারপর সে উঠবে, তার পিছে আবার আরেকটা, তার পিছে তার ছোট ভাইয়ের ছেলের জামাইয়ের মালিকের বাস। সবাই একই কোম্পানির, সবাই একই গন্তব্যের, কিন্তু রেস হচ্ছে আলাদা অক্ষর দিয়ে।
শাহবাগ থেকে শুরু করে মিরপুর ১০ পর্যন্ত সিটি বাসগুলো এখন রাস্তায় আড়াআড়ি ঘুমায়। যেন তারা পুতুলনাচের ঘোড়া—থামছে, ঘুরছে, ঠেলছে, কিন্তু চলছে না!
🚌 গন্তব্যহীন গতি :
বাসগুলো এমন ভাবে থামে, যেভাবে ছাত্ররা একসাথে ঘরে ঢুকে মায়ের কাছে বলে, "আমার কিছুই হয়নি, ওইটা বলবে না মা!"
এক বাস যাত্রী নিচ্ছে রাস্তার একেবারে মাঝখানে দাঁড়িয়ে, ডান লেনে।
পিছে আরেকটা বাস তাকে পাশ কাটিয়ে তার সামনে ঢুকে গেল।
তার পিছে আবার অন্য কোম্পানির "রাজধানী রাজা লিমিটেড" বাস এসে ফস করে দাঁড়িয়ে গেলো এমনভাবে যেন সে এই শহরের শেষ স্টপ।
পথচারীরা গন্তব্যে নয়, গন্ধব্যে পৌঁছে যাচ্ছে, কারণ একদিকে বাসের শব্দ, আরেকদিকে মোটরসাইকেল রিকশা রিকভারি!
💸 ট্রাফিক ভাইয়ের তবলা বাজানো :
এদিকে, ট্রাফিক পুলিশ ভাই দাঁড়িয়ে আছেন চুপচাপ। এক হাতে স্টিক, আরেক হাতে “ভাংতি লাগবে নাকি ভাই?” সিস্টেম।
একদিকে মানুষ চিৎকার করছে—“ভাই, চলেন দেন!”, আর তিনি ব্যস্ত রিকশার পেছনের বক্স খুলে ম্যাজিস্ট্রেটিক মুচকি হেসে বলছেন—
"এইটা তো অফিসিয়ালি কেস দিছি ভাই… দুইশ টাকায় সই দেন।"
গরমে রাস্তা গলে যাচ্ছে, মানুষ গলে গিয়ে তরল হয়ে পড়ছে, কিন্তু ট্রাফিক ভাইয়ের ফিটনেস, ধৈর্য এবং গেটআপ একদম ব্রিটিশ ভিক্টোরিয়ার মতো—হিল ছুঁয়ে দাঁড়িয়ে টাকা নিচ্ছেন, কারনে অকারণে।
😠 গালি ও গলি – দুটোতেই ঠাঁই নাই :
বাসের যাত্রী গালাগাল দিচ্ছে বাস চালককে।
চালক বলছে,
"বস, এইটাই সিস্টেম। আমার পিছে ভাইয়ার বাস। ভাইয়ার পিছে আমার মামার বাস। আমরা একে অপরের ওপর নির্ভর করি!"
মোটরবাইকের চালক দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে জিপিএস চালু করে দেখছে, সে এখন "বনানী" তে না “বাহান্নতে” আছে।
এদিকে একজন রোদে দাঁড়ানো ভদ্র মহিলা বলছেন,
"এই শহরে ভদ্রভাবে বাঁচতে গেলে আগে পাগল হতে হয়।"
📣 কার দোষ বেশি? জনগণের গলা থেকে উত্তর :
“এই সমস্যার জন্য কে দায়ী?”—এই প্রশ্ন করতেই সকলে একযোগে বলে উঠে:
“সবাই!”
কেউ বলে ড্রাইভার, কেউ বলে মালিক, কেউ বলে ট্রাফিক, কেউ বলে সরকার।
একজন দাড়িওয়ালা দাদা বললেন:
"সরকার ভালোই ছিল, শুধু রাস্তা বানিয়ে আমাদের উপর পরীক্ষা চালাইছে।"
📌 বাংলাদেশের সিস্টেম – "ড্যামেজড বাই ডিজাইন"
বাংলাদেশের ট্রাফিক সমস্যার মধ্যে একটা কবিতা আছে, একটা অলস কোরিওগ্রাফি, একটা কাটাকুটি পরীক্ষা।
বাস চলার আগে অন্য বাসকে দেখে থামে, মানুষ রিকশা ছেড়ে হেঁটে যায়, কারণ গন্তব্যে পৌঁছানোর চেয়ে বাস থেকে বাঁচা জরুরি।
এদেশে রাস্তায় নামা মানেই "লাইভ কমেডি শো" দেখা।
🔥 ভাইরাল হতে হলে মাথা ঠান্ডা নয়, রাস্তা গরম থাকতে হয়
আমরা শুধু হাঁসি দিয়ে বলি:
"এই তো বাংলাদেশ! এখানেই সব সম্ভব, কারণ এখানে নিয়ম নয়, ধৈর্য্যই নিয়তি!"
#বাসবাদ #ঢাকার_যন্ত্রণা #ট্রাফিক_কমেডি #সিস্টেমে_সিস্টেম_নাই