ওজনপুরের অভিশাপ: এক অদ্ভুত কম-গ্রাম কাহিনি

“ওজনপুর, সে এক আজব দেশ, 
যেখানে সবকিছুর ওজন কম, নেই তার রেশ। 
সকাল থেকে সন্ধ্যা, হিসেব কষে কষে, 
গ্রামের মানুষ বাঁচে শুধু, কম-গ্রামের দোষে। 

বাজারের পাল্লায়, এক কেজি মানে আধা, 
শ্রমিকের ঘামে মেশে, শুধু বঞ্চনার কাঁদা। 
ধানের গোলায় কমে, চালের বস্তায় ফাঁকি, 
ওজনপুরের অভিশাপ, এ কেমন আঁকাআঁকি! 

কথা ছিল, হবে সবার সমান ভাগ, 
কিন্তু এখানে শুধু বাড়ে, শোষকেরই দাগ। 
মিষ্টির দোকানে চিনি কম, হাসিতে বিষাদ, 
এ কেমন বিচার, এ কেমন প্রবাদ!

 শিক্ষার আলোতে, জ্ঞানের ওজন হালকা, 
মেধার কদর নেই, শুধু ক্ষমতার ঝলকা। 
প্রতিভার ডানা ছেঁড়া, স্বপ্নেরা সব পঙ্গু, 
ওজনপুরের বাতাসে ভাসে, এক অদ্ভুত জঙ্গু। 

নেতারা আসে, বড় বড় বুলি আওড়ায়, 
উন্নয়নের নামে, আরও ওজন কমায়। 
প্রতিশ্রুতির পাল্লায়, শূন্যের চেয়েও কম, 
জনতার চোখে তাই, জমে ওঠে ক্ষোভের দম। 

চিকিৎসার নামে চলে, টাকার কারবার, 
ওষুধের গুণ কমে, বাড়ে শুধু হাহাকার। 
ন্যায়ের দাঁড়িপাল্লায়, অবিচারই ভারী, 
ওজনপুরের অভিশাপ, এ কেমন জারি! 

কিন্তু আর নয়, এই কম-গ্রামের খেলা, 
জাগো হে জনতা, ভাঙো এই শৃঙ্খল বেলা। 
প্রতিটি কণার হিসেব চাই, প্রতিটি ঘামের দাম, 
ওজনপুরের অভিশাপ, আজ হবেই খতম! 

পাল্লায় পাল্লায় আজ, সত্যের ওজন হোক, 
শ্রমের মর্যাদা ফিরে আসুক, ঘুচে যাক সব শোক। 
কম-গ্রামের কাহিনি আর নয়, চাই পূর্ণ হিসাব, 
ওজনপুরের অভিশাপ, আজ হবেই অভিশাপ!

 বিপ্লবের আগুন জ্বালো, ন্যায়ের তরে আজ, ও
জনপুর ফিরে পাক, তার হারানো তাজ। 
পূর্ণ হোক প্রতিটি গ্রাম, প্রতিটি মানুষের মান, 
ওজনপুরের অভিশাপ, আজ হোক অবসান!”

ওজনে কম: এক রহস্যময় ব্যাধির পেছনের অদৃশ্য গল্প : বাংলাদেশের প্রতিটি হাট-বাজারে, শহর-গ্রামে, মোড়ের দোকানে কিংবা বড় বড় সুপারশপে—একটি অদ্ভুত কিন্তু অদৃশ্য ব্যাধি ছড়িয়ে আছে, যার নাম “ওজনে কম”।

আপাতদৃষ্টিতে এটি যেন শুধুই একটি অনিয়ম; কেউ আপেল বা কমলা বা আঙুর বা দেশীয় ফল কিনে বাসায় গিয়ে দেখে ১ কেজির জায়গায় ৮৫০ গ্রাম, কেউ চালের বস্তা থেকে খুঁজে পায় বালির হালকা ছোঁয়া, আবার কেউ লিটার হিসাবে কেনা তেলে খুঁজে পায় ১০০ মিলি রহস্যজনকভাবে উধাও। কিন্তু আসলেই কি এটি কেবল মানুষের লোভ? নাকি এর পেছনে আছে কোনো রহস্যময় শক্তি?

উৎসবের দিনে শুরু হয়েছিল সবকিছু একটি কাল্পনিক জনপদ—'ওজনপুর'—যেখানে মানুষেরা ছিল অত্যন্ত সৎ ও নিষ্ঠাবান। সেখানে প্রতিটি ব্যবসায়ী এক গ্রামও কম দিত না। বলা হতো, ওজনপুরের মানুষরা ওজন মাপার আগে দোয়া পড়ত: “হে মহান, যেন আমি কারও হক নষ্ট না করি।” তাদের ওজনের পাল্লাগুলোও যেন ছিল আশীর্বাদপুষ্ট। কিন্তু একদিন এক অদ্ভুত ঘটনা ঘটে। এক বণিক ভুলক্রমে একজন ফেরেশতার মাপের পাল্লা ব্যবহার করে ফেলে। সে দেখে, ক্রেতার দেওয়া মুদ্রা নিজে থেকেই পাল্লার ওপর ভারসাম্য আনছে! লাভ বেড়ে যায়, খরিদ্দার খুশি—কিন্তু সে জানে না, এটি ছিল এক পরীক্ষা। অদৃশ্য ভাইরাস ‘কম-গ্রাম’ তখনই ছড়িয়ে পড়ে এক অদৃশ্য ভাইরাস—‘কম-গ্রাম’। এটি কোনো জৈবিক ভাইরাস নয়, এটি একটি নৈতিক ব্যাধি। যেখানেই একজন ব্যবসায়ী এক চিমটি কম দেয়, সেখানেই এই ভাইরাসের ছায়া পড়ে। ক্রমশ এটি ছড়িয়ে পড়ে পুরো দেশে। দোকানিরা নিজেরাও বুঝতে পারে না—কেন যেন তাদের পাল্লা আজকাল একটু কম দিচ্ছে।

ডিজিটাল মাপযন্ত্রও যেন এক রহস্যময় চুম্বকের টানে গ্রাম হারিয়ে ফেলে। ওজনের যাদুকর আর তিনটি চুক্তি জনশ্রুতি আছে, কোন এক গহীন হাওরে বাস করে ‘ওজনের যাদুকর’। সে নাকি তিনটি চুক্তি দেয়— ১. "তুমি যত কম দেবে, ততই লাভ হবে।" ২. "তুমি যদি ধরা না পড়ো, সমাজ তোমাকে সফল বলবে।" ৩. "তুমি যেহেতু একাই করছো না, এতে কোনো পাপ নেই।" অনেকেই এই চুক্তিতে সই করে। তারা ধীরে ধীরে পরিণত হয় ‘ওজন হরণকারী’তে। কিন্তু কেউ জানে না, এই চুক্তির শেষ লাইনটিতে অদৃশ্য কালিতে লেখা থাকে “তবে মনে রেখো, প্রতিটি কম-গ্রামের হিসেব রাখে আসমানের এক ফেরেশতা।”

ওজনপুরের উত্তরসূরি আজও কিছু মানুষ আছে যারা এই ব্যাধির প্রতিরোধক হয়ে বেঁচে আছেন। তারা এখনো এক কেজিকে এক কেজিই ভাবে। তারা বলেই ওঠে—"ভাই, দেইখা নেন, কম যেন না হয়।" তারা ওজনপুরের উত্তরসূরি। তারা হয়তো সংখ্যায় কম, কিন্তু তারা জানে—ওজনের বিচার শুধু দুনিয়াতে নয়, আখিরাতে হবে। ওজনে কম দেওয়া কেবল একটি অর্থনৈতিক অনিয়ম নয়, এটি একটি আধ্যাত্মিক ও নৈতিক ব্যাধি। এটি প্রতিরোধের একমাত্র উপায়—নিজের বিবেক জাগ্রত রাখা, ফেরেশতার হিসেব মনে রাখা, এবং সাহস করে সত্যের পাল্লা ভারী করা। তাহলে হয়তো একদিন ওজনপুর আবার ফিরে আসবে, বাস্তবের বাংলাদেশে।

🧙‍♂️ ওজনপুরের অভিশাপ: এক অদ্ভুত কম-গ্রাম কাহিনি 🍚🍎🛢️ এক দেশে ছিল এক আজব রাজ্য—নাম তার ওজনপুর। সেখানে আপেল ছিল বড়, কিন্তু ভেতরে হাওয়া। মুড়ি ছিল খাস্তা, কিন্তু ওজনে শূন্য। আর তেল? সে তো এমনই হালকা ছিল যে বোতলে ঢাললে আওয়াজ করত, “হেই! আমি আছি না!” সবচেয়ে মজার ব্যাপার—এই ওজনপুরে কেউই “কম দিয়েছে” স্বীকার করত না। দোকানিরা বলত, “ভাই, এইটা কোম্পানির কায়দা।” “এইটা আবহাওয়ার জন্য।” “এইটা আসলে গ্র্যাভিটির সমস্যা।” গ্র্যাভিটি! আপনি ভুল শুনছেন না। এ দেশে কেউ এক কেজি চাল কিনলে তা ৯৬০ গ্রাম হয়, কারণ, “বাকিটা পৃথিবীর কেন্দ্রের দিকে টেনে নিচ্ছে।”

🍎 ফল বিক্রেতার ফাঁকিবাজি আপনি বললেন: —“ভাই, এক কেজি আপেল দেন।” সে আপনাকে চারটা মোটা-মোটা আপেল দিল। আপনি খুশি হয়ে বাসায় গিয়ে কাটলেন, দেখলেন—ভেতরে আধা পোকা, আধা আশা। ফল বিক্রেতা বলল, “ভাই, আপেল তো আপেলই! ভেতরে কি আছে, সেটা তো বাইবেলেও লেখা নাই!”

🛢️ তেলওয়ালার তেলেসমাতি তেল কিনতে গেলেন। দোকানি বোতল ভর্তি তেল দিল, কিন্তু ওজন করতেই দেখা গেল—২০ মিলি গায়েব। আপনি প্রশ্ন করলেন, —“ভাই, তেল কম কেন?” উনি বলল, “এইটা হলো ‘উবে যাওয়া’ তেল। বোতলে থাকলেও আত্মা থাকে না।” এমনকি কেউ কেউ তো তেলের বোতলের ঢাকনাতেই লিখে রাখে: “১ লিটার না হলেও, মন ভরবে।”

🏺 মুদি দোকানের মন্ত্র মুদি দোকানে গেলেন ডাল কিনতে। আপনি বললেন, —“ভাই, এক কেজি মসুর ডাল দেন।” উনি হাত ঘুরিয়ে পাল্লায় কিছু ঢাললেন, তারপর ছিটকে বললেন, —“এইডা এক কেজির চাইতেও একটু বেশি হইছে!” বাসায় এসে মেপে দেখলেন ৮৮০ গ্রাম। আসলে ওজনপুরে এক কেজির মানদণ্ড একটাই— যতটুকু দিলে ক্রেতা চুপ থাকে, সেটাই এক কেজি!

🤔 তদন্তে নেমে এল “কম-গ্রাম কমিশন” জনগণের ক্ষোভে সরকার গঠন করল “কম-গ্রাম কমিশন”। তারা এক মাস ধরে ওজনপুরের সব পাল্লা জব্দ করল। শেষে রিপোর্ট দিল— “দুঃখিত, ওজন কমে যাচ্ছে স্বাভাবিকভাবে। কারণ পাল্লাগুলো ডায়েটে আছে।” কমিশনের প্রধান একজন ১৪৫ কেজি ওজনের ভদ্রলোক। তার কথা, “ওজনে কম দেওয়া দোষ না, বেশি খাওয়াই সমস্যা।”

🎭 ওজনপুর এখনো আছে—আমাদের চারপাশে। আপনি চিনি নেন, চাল নেন, তেল নেন—সবকিছুতেই "একটু কম, একটু বেশির" এক অলৌকিক খেলা চলছে। আর দোকানিরা দিব্যি বলে— “ভাই, বিশ্বজুড়ে সবকিছু হালকা হইতেছে, শুধু মানুষই বুঝে না!”


📢 এই দেশে ওজনের পাল্লা একটাই জিনিস—যেটা সবসময় অন্য দিকেই ঝুঁকে থাকে!
Previous Post Next Post
Love Poems
Health Tips
Food & Recipes
Read Books
Job Circulars
Loading...
Loading...
Loading...
Loading...
Loading...