আমলাতন্ত্র বনাম জনগণ


সরকারি চাকরিবিধি আইন দুর্নীতিমুক্ত সেবা নিশ্চিতের পথ খুলবে। জনগণের অধিকার রক্ষায় ঐতিহাসিক পদক্ষেপ। আইন পাশের পক্ষে মত দিন।

বাংলাদেশের ইতিহাসে যুগান্তকারী এক মুহূর্তের সূচনা হয়েছে, যখন ইউনূস সরকার সরকারি চাকরিতে শৃঙ্খলা ফেরাতে “সরকারি চাকরিবিধি আইন” নামে একটি কঠোর আইন পাশ করার উদ্যোগ নিয়েছে। এই আইনের মূল উদ্দেশ্য, সরকারি কর্মকর্তারা যেন দায়িত্বহীনতা, অনুপস্থিতি, দুর্নীতি ও ঘুষের মতো অপরাধের জন্য যথাযথ শাস্তির আওতায় আসে। যেখানে এতদিন এসব অপরাধে সর্বোচ্চ শাস্তি ছিল বদলি, এবার সেটা হতে পারে চাকরিচ্যুতি!

এই উদ্যোগ সাধারণ মানুষের মাঝে আশার আলো জ্বালালেও, সচিবালয়ের আমলাদের মধ্যে সৃষ্টি করেছে প্রচণ্ড ক্ষোভ। কারণ তারা জানে, এই আইন পাস হলে আর তারা আগের মতো অবাধে ঘুষ নিতে পারবে না, দায়িত্বহীনভাবে অফিসে আসা-যাওয়া করতে পারবে না, আর "টেবিলের নিচে বান্ডিল" নেওয়া রুটিন হয়ে থাকবে না।

কেন ভয় পেয়েছে আমলারা?

আমলারা বছরের পর বছর ধরে নিজেদের ক্ষমতার অপব্যবহার করে জনগণকে জিম্মি করে রেখেছে। জন্মনিবন্ধন সংশোধন হোক বা এনআইডি আপডেট, সব কাজেই ভোগান্তি আর দালালচক্র। টাকা দিলে কাজ হয় আর না দিলে কাজ আটকে থাকে, নয়তো ভেজা কাগজ দেখিয়ে ফেরত পাঠানো হয়। কিন্তু টাকা দিলে সেই ‘অসম্ভব কাজ’ নিমেষে সম্ভব হয়ে যায়!

তাই ইউনূস সরকারের পদক্ষেপ তাদের গায়ে আগুন লাগিয়ে দিয়েছে—প্রতীকি নয়, বাস্তবেও সচিবালয়ের চারপাশের রাস্তায় আগুন জ্বলেছে। তারা রাস্তা অবরোধ করছে, অফিস বন্ধ রাখার হুমকি দিচ্ছে, এমনকি প্রধানমন্ত্রীর উপর চাপ সৃষ্টির জন্য আন্দোলনে নেমেছে।

জুলাই আন্দোলনে আমলারা কোথায় ছিল?

যেখানে রিকশাওয়ালা, ভ্যানচালক, মেসের খালারা পর্যন্ত রাস্তায় নেমেছিল জনগণের পক্ষ নিয়ে, সেখানে এই আমলারা ছিল নিরব দর্শক। কেন? কারণ তাদের জানার ছিল—যদি পুরনো শাসনব্যবস্থা চলে যায়, তবে তাদের অবৈধ উপার্জনের পথও বন্ধ হয়ে যাবে। তাই তারা হাসিনার পক্ষে থেকেই বোঝাতে চেয়েছে, "আপা, আমরা আপনারই লোক।"

কিন্তু ইউনূস সরকার স্পষ্ট ভাষায় বলে দিয়েছে—"আমলা মানে জনগণের কর্মচারী", আর এজন্যই “স্যার” বলা বন্ধের নির্দেশ এসেছে। এতে চরমভাবে ক্ষুব্ধ হয়েছে তারা।

আমলাতন্ত্রের সংস্কার হবে কবে?
আমলাদের অবাধ ক্ষমতা ও লোভের সংস্কৃতিকে যদি এখনই রুখে না দেওয়া যায়, তবে ভবিষ্যতেও প্রতিটি সরকারি সেবা পেতে জনগণকে ঘন্টার পর ঘন্টা লাইনে দাঁড়াতে হবে, ঘুষ দিতে হবে, এবং অপমান সহ্য করতে হবে।

এই আইন পাস হলে আমলাদের আর ইচ্ছেমতো খেলার সুযোগ থাকবে না। অফিস মানেই হবে—সেবা, দায়বদ্ধতা ও পেশাদারিত্ব। আর এটাই তো ছিল স্বাধীনতার লক্ষ্য—জ

আজ জনগণের সামনে একটা ঐতিহাসিক সুযোগ এ এক হতে হবে, ইউনূস সরকারের পাশে দাঁড়াতে হবে। এই আইন পাস করা মানে শুধু আমলাতন্ত্রে শৃঙ্খলা আনা নয়—এটা জনগণের অধিকার নিশ্চিত করার যুদ্ধ।

এই যুদ্ধে নিরবতা মানে আত্মসমর্পণ, আর প্রতিরোধ মানে মুক্তি।

আপনি কি এই আইনের পক্ষে? আপনি কি আমলাদের দুর্নীতির শিকার হয়েছেন? আপনার অভিজ্ঞতা আমাদের কমেন্টে জানাতে ভুলবেন না।
Previous Post Next Post
Love Poems
Health Tips
Food & Recipes
Read Books
Job Circulars
Loading...
Loading...
Loading...
Loading...
Loading...