ছায়ার ভেতরের আলো

নিউ মার্কেটের এক উত্তপ্ত সন্ধ্যায় ভুল বোঝাবুঝির শিকার হয় রাহাত—সহায়তা করেও হয়ে যায় সন্দেহের পাত্র। সমাজের চোখে তার সৎ কাজও প্রশ্নবিদ্ধ হয়। মায়ের উৎসাহে সে শুরু করে “রাতের ছায়া” নামে একটি ব্লগ, যেখানে সে লিখতে থাকে জীবনের ছোট ছোট সত্য, সমাজের দ্বিমুখীতা, ও নীরব প্রতিবাদ। প্রতিদিনের অভিজ্ঞতা ও আত্মসংঘাতের মাধ্যমে সে পাঠকদের সামনে তুলে ধরে বাস্তবতার ভেতরের আলো-আঁধারি। তার কলম ধীরে ধীরে পাঠকদের ছুঁয়ে যেতে থাকে। একদিন সেই ছাত্র, যে তাকে ভুল বুঝেছিল, ইনবক্সে মেসেজ পাঠিয়ে ক্ষমা চায়। রাহাত বুঝে যায়—সত্য, ধৈর্য ও কলম মিলে সমাজকে নাড়িয়ে দেওয়া সম্ভব। তার লেখা হয়ে ওঠে পরিবর্তনের এক নির্ভীক কণ্ঠস্বর। এই গল্প প্রমাণ করে, এক মুহূর্তের ভুল বুঝা মানুষের জীবন বদলে দিতে পারে, তবে এক সত্যি গল্প আর সাহসী কলম সেটিকে গড়েও তুলতে পারে।

রাহাত সারারাত ঘুমাতে পারেনি। বারবারই তার চোখের সামনে ভেসে উঠছিল নিউ মার্কেটের সেই উত্তপ্ত সন্ধ্যার দৃশ্য। নিজের চোখে দেখা, অথচ বিশ্বাস করতে কষ্ট হচ্ছে—শুধু সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয়ায় সে এখন সন্দেহের চোখে দেখা হচ্ছে।

সকালে মা খাবার দিতে এসে বললেন, “বাবা, তুই তো সবসময় ভালো করার চেষ্টা করিস, কিন্তু সব জায়গায় তা সবাই বুঝবে না।”

রাহাত হাসল না, কাঁদলও না। শুধু বলল, “মা, আমি কী তাহলে ভুল করলাম?”

মা মাথায় হাত বুলিয়ে বললেন, “ভালো কিছু করলেও এই সমাজ সবসময় পেছনে টানে। কিন্তু ভালো কাজ থামিয়ে দেওয়া যাবে না। হয়তো একদিন তারাই বুঝবে।”

এই কথাগুলো ছিল রাহাতের কাছে মন্ত্রের মতো। সে সিদ্ধান্ত নিল, সে সমাজে একটি বার্তা ছড়াবে—ভালোকে ভালো বলা শিখুক সবাই।

📌 সে একটা ব্লগ খোলে: “রাতের ছায়া” নামে।

📌 সেখানে প্রতিদিনের অভিজ্ঞতা লিখতে থাকে, ছোট ছোট গল্প, জীবনের টুকরো বাস্তবতা।

📌 তার লেখায় উঠে আসে সমাজের অন্তর্নিহিত দ্বিমুখীতা, নিরবতার প্রতিবাদ, ও নিজের ভেতরের লড়াই।

দিন যায়, রাত যায়। ধীরে ধীরে তার ব্লগ মানুষের নজরে আসে। একদিন সেই ছাত্র, যে রাহাতকে সন্দেহ করেছিল, ইনবক্সে ম্যাসেজ পাঠায়:

“ভাই, সেদিন তোমার চোখে সত্য দেখেছিলাম। ক্ষমা চাচ্ছি। আপনার লেখাগুলো আমার চোখ খুলে দিচ্ছে।”

রাহাত বুঝে গেল—একটি রাত, একটি ভুল বোঝাবুঝি, আর একটি নির্ভীক কলম—সমাজ বদলে দিতে পারে।
Previous Post Next Post
Love Poems
Health Tips
Food & Recipes
Read Books
Job Circulars
Loading...
Loading...
Loading...
Loading...
Loading...