⏳ Loading...
🔄 পোস্ট লোড হচ্ছে...

যে গল্পগুলো বলা হয়নি: শহরের প্রান্তিক মানুষের হারিয়ে যাওয়া স্বপ্ন |

প্রান্তিক মানুষ, হারানো স্বপ্ন, শহরের গল্প, সমাজের অবহেলা, অনকথা জীবন, সমাজচিন্তা,

শহরের প্রান্তিক মানুষের জীবন প্রায়ই অদেখা ও অবহেলিত থাকে। তাদের হারানো স্বপ্ন, লুকানো সংগ্রাম আর অনকথা গল্পগুলো সাধারণত সমাজের মূল স্রোত থেকে আলাদা। এই লেখায় আমরা সেই গল্পগুলো সামনে আনতে চেয়েছি যা কখনো বলা হয়নি—যেসব মানুষ ছায়ার মতো শহরের কোণে বাস করে, যাদের আশা-স্বপ্ন সমাজে স্থান পায়নি। তাদের জীবনের কষ্ট, নির্যাতন ও ধূসর বাস্তবতার কথা বোঝার মাধ্যমে আমরা আরও মানবিক ও সচেতন সমাজ গড়ার চেষ্টা করতে পারি।
ব্যস্ততার আড়ালে – ঢাকার লুকানো বাস্তবতা ঃ
ঢাকা, এক মেগাসিটি যা জীবনের স্পন্দনে মুখরিত, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের কেন্দ্র এবং স্বপ্নের এক চুম্বক। এটি এমন এক শহর যেখানে সুউচ্চ অট্টালিকাগুলো বিস্তৃত বস্তি এলাকার উপর দীর্ঘ ছায়া ফেলে। এই প্রাণবন্ত সম্মুখভাগ প্রায়শই এর সবচেয়ে দুর্বল বাসিন্দাদের গভীর সংগ্রামকে আড়াল করে রাখে । এই প্রতিবেদনটি ঢাকার প্রান্তিক শহুরে মানুষের "বলা না হওয়া গল্প" এবং "হারিয়ে যাওয়া স্বপ্ন" নিয়ে গভীর অনুসন্ধান করবে, যা দ্রুত, অপরিকল্পিত নগরায়ণ এবং পদ্ধতিগত অবহেলার মানবিক মূল্য তুলে ধরবে। এর লক্ষ্য হলো প্রান্তিক জীবনযাপনকারী মানুষের স্থিতিস্থাপকতা, আকাঙ্ক্ষা এবং দৈনন্দিন সংগ্রামকে আলোকিত করা, যাদের কণ্ঠস্বর প্রায়শই শোনা যায় না।

ঢাকা শহরকে প্রায়শই "স্বপ্ন ও সংগ্রামের শহর" হিসেবে বর্ণনা করা হয়, যেখানে মানুষ প্রতিদিন "এক উন্নত ভবিষ্যতের সন্ধানে স্বপ্ন নিয়ে লড়াই করে" । গ্রাম থেকে আসা নতুন মুখগুলো আশায় ভরা চোখে এবং সংগ্রামের গল্প নিয়ে আসে, একটি উন্নত জীবনের সন্ধানে । তবে, এই "স্বপ্ন" প্রায়শই প্রান্তিক মানুষের জন্য একটি মরীচিকা হয়ে দাঁড়ায়, যা প্রকৃত উন্নতির পরিবর্তে কেবল টিকে থাকার ন্যূনতম উপায় সরবরাহ করে। এই বৈপরীত্য একটি গভীর বেদনাদায়ক চিত্র তুলে ধরে: যে শহরটি আশা জাগায়, সেটিই একই সাথে সেই স্বপ্নগুলোকে পিষ্ট করে। এই পরিস্থিতি একটি মৌলিক অসঙ্গতি নির্দেশ করে, যেখানে শহরে আসার আকাঙ্ক্ষা নতুন এক ধরনের সংগ্রামের দিকে ঠেলে দেয়।

প্রান্তিকতার বুনন: কারা বাস করে প্রান্তিক অঞ্চলে?
ঢাকায় "প্রান্তিক শহুরে মানুষ" কেবল অর্থনৈতিক দারিদ্র্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়; এটি একটি জটিল প্রক্রিয়া যা ব্যক্তি ও গোষ্ঠীকে অর্থনৈতিক, সামাজিক এবং রাজনৈতিক ক্ষমতা থেকে বঞ্চিত করে, প্রায়শই তাদের পরিচয়ের ভিত্তিতে । বাংলাদেশের অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় শিশু, আদিবাসী, দলিত, অতি দরিদ্র, নারী ও পুরুষ যৌনকর্মী, এইচআইভি/এইডস আক্রান্ত ব্যক্তি, তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ এবং প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের প্রান্তিক গোষ্ঠী হিসেবে স্পষ্টভাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। জাতি, ধর্মীয় পরিচয়, বর্ণ, জাতিসত্তা, পেশা এবং অন্যান্য বৈশিষ্ট্য-ভিত্তিক পরিচয়ের ভিত্তিতে তারা বৈষম্যের শিকার হন ।

ঢাকার জনসংখ্যার একটি উল্লেখযোগ্য অংশ বস্তি dwellers, যেখানে প্রায় ৩-৪ মিলিয়ন মানুষ ৪,০০০ এরও বেশি অনানুষ্ঠানিক বসতিতে বসবাস করে । এই বসতিগুলো সাধারণত নিম্নমানের বাসস্থান, অতিরিক্ত জনবসতি এবং দুর্বল পরিষেবা দ্বারা চিহ্নিত । যদিও অনেক জাতিগত সংখ্যালঘু প্রধানত দেশের নির্দিষ্ট অঞ্চলে (যেমন পার্বত্য চট্টগ্রাম, সিলেট) বসবাস করে, তবে "প্রান্তিক সম্প্রদায়" এর ধারণার মধ্যে তাদেরও অন্তর্ভুক্ত করা হয় । আদিবাসী গোষ্ঠীগুলোকে "জাতিগত সংখ্যালঘু গোষ্ঠী" হিসেবে সরকারের শ্রেণীকরণ তাদের আত্মপরিচয়ের মৌলিক অধিকারের বঞ্চনা হিসেবে বিবেচিত হয় ।
বাংলাদেশে অন্তত ৩০ মিলিয়ন প্রান্তিক মানুষ রয়েছে । ঢাকায়, প্রায় ৩৫% মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে, যার মধ্যে প্রায় ২০% বস্তি এলাকায় চরম দারিদ্র্যের শিকার । এই পরিসংখ্যানগুলো শহুরে প্রান্তিকতার বিশালতা তুলে ধরে। প্রান্তিক মানুষের এই বিশাল সংখ্যা (শুধুই ঢাকায় লক্ষ লক্ষ) তাদের অবহেলাকে বিচ্ছিন্ন দারিদ্র্যের ঘটনা না করে একটি পদ্ধতিগত, গভীরভাবে প্রোথিত সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত করে। তাদের বিশাল সংখ্যা সত্ত্বেও মূলধারার আলোচনা এবং নীতিতে তাদের "অদৃশ্যতা" তাদের রাজনৈতিক ক্ষমতা এবং সামাজিক স্বীকৃতির অভাবের একটি গুরুত্বপূর্ণ সূচক।

প্রান্তিক জনগোষ্ঠী কেবল "শহুরে দরিদ্র" এর একটি একক গোষ্ঠী নয়, বরং বিভিন্ন সম্প্রদায় যারা বহু-মাত্রিক বঞ্চনার শিকার। উদাহরণস্বরূপ, একজন আদিবাসী প্রতিবন্ধী নারী বঞ্চনার একাধিক স্তরের মুখোমুখি হন, যা তার অধিকার এবং পরিষেবার প্রাপ্তিকে বহুগুণ প্রভাবিত করে। এই জটিলতা ব্যাপক, এক-আকারের সমাধানের পরিবর্তে সূক্ষ্ম, আন্তঃবিভাগীয় নীতিগত প্রতিক্রিয়া দাবি করে।

একটি দিনের জীবন: টিকে থাকার কঠোর বাস্তবতা
ক. অনিশ্চিত বাসস্থান এবং সীমিত পরিষেবা
ঢাকার বস্তিগুলোতে লক্ষ লক্ষ মানুষ "চাটাইয়ের দেয়াল এবং টিনের ছাদযুক্ত ঝুপড়ি"তে বাস করে । এসব ঘর দাহ্য পদার্থ দিয়ে তৈরি হওয়ায় আগুন লাগার ঝুঁকি বেশি । উচ্ছেদের হুমকি তাদের নিত্যসঙ্গী । অতিরিক্ত জনবসতি রোগের ঝুঁকি বাড়ায় । অনেক বস্তি ব্যক্তিগত মালিকানাধীন, যা অনিয়ন্ত্রিত ভাড়া বৃদ্ধি এবং ঘন ঘন স্থানান্তরের কারণ হয় । এই ঘন ঘন স্থান পরিবর্তন শিশুদের স্কুল, স্বাস্থ্যসেবা এবং ক্ষুদ্রঋণ প্রাপ্তিতে বাধা সৃষ্টি করে ।

বিশুদ্ধ পানি, পয়ঃনিষ্কাশন এবং স্যানিটেশন ব্যবস্থার অপর্যাপ্ততা একটি বড় সমস্যা । দূষিত পানির উৎস থেকে জলবাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়ে । কিছু সম্প্রদায়, বিশেষ করে জাতিগত সংখ্যালঘুরা, লবণাক্ততার কারণে বিশুদ্ধ পানির সংকটে ভোগে এবং দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে পানি সংগ্রহ করতে হয় । স্বাস্থ্যসেবা পরিষেবা অত্যন্ত অপর্যাপ্ত, চিকিৎসা সুবিধা এবং পেশাদারদের সীমিত প্রবেশাধিকারের কারণে বাসিন্দারা দারিদ্র্যের চক্রে আটকা পড়ে । শ্বাসতন্ত্রের রোগ, ত্বকের রোগ এবং ডায়রিয়া সাধারণ ঘটনা ।

বস্তি dwellersরা বন্যাসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রতি অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ, কারণ তারা নিচু এলাকায় এবং দুর্বল অবকাঠামোতে বাস করে । দাহ্য নির্মাণ সামগ্রীর কারণে আগুন লাগার ঘটনাও সাধারণ ।

খ. জীবিকার সংগ্রাম
অধিকাংশ শহুরে দরিদ্র মানুষ অনানুষ্ঠানিক "রাস্তার অর্থনীতি"তে জীবিকা নির্বাহ করে, যা নমনীয় ও অনিশ্চিত । এর মধ্যে রিকশা চালানো, পয়ঃনিষ্কাশন পাইপ পরিষ্কার করা, ভবন ভাঙা এবং পোশাক কারখানার কাজ অন্তর্ভুক্ত । মজুরি প্রায়শই ন্যূনতম মজুরির নিচে থাকে (যেমন, পোশাক শ্রমিকদের মাসিক $৫১) । কাজ অনিয়মিত এবং বিপজ্জনক ।

অর্থনৈতিক কার্যক্রম প্রায়শই অবৈধ বলে বিবেচিত হওয়ায়, শহুরে দরিদ্ররা হয়রানি এড়াতে এবং ব্যবসা চালিয়ে যেতে স্থানীয় এজেন্টদের (অর্থ, পেশিশক্তি, রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা) সাথে "সামাজিক-চুক্তি সম্পর্ক" গড়ে তুলতে বাধ্য হয়, যার মধ্যে ঘুষ এবং "স্থান ভাড়া" প্রদান অন্তর্ভুক্ত । এটি তাদের দৈনন্দিন জীবনের একটি বাস্তবতা, ব্যতিক্রম নয়।

রাজ্যের অস্পষ্ট অবস্থান – তাদের স্থায়ীভাবে উচ্ছেদ না করা, কিন্তু তাদের জীবিকাকে বৈধতাও না দেওয়া – একটি চিরস্থায়ী অবৈধতা এবং দুর্বলতার পরিস্থিতি তৈরি করে । এটি প্রান্তিকদের আনুষ্ঠানিক ব্যবস্থার বাইরে কাজ করতে বাধ্য করে, তাদের অনানুষ্ঠানিক ক্ষমতা কাঠামোর উপর নির্ভরশীল করে তোলে এবং শোষণের শিকার হওয়ার প্রবণতা বাড়ায়, অধিকার দিয়ে ক্ষমতায়ন করার পরিবর্তে। তাদের টিকে থাকাটাই এক প্রকার অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হয়, যা তাদের অনিশ্চয়তার চক্রে আটকে রাখে।

এই "আলোচনা" (ঘুষ, চাঁদা, "স্থান ভাড়া" প্রদান) তাদের টিকে থাকার একটি প্রক্রিয়া মনে হলেও, এটি আসলে একটি জোরপূর্বক কর ব্যবস্থা । এটি তাদের সামান্য আয়কে প্রয়োজনীয় চাহিদা বা স্বপ্নের (যেমন শিক্ষা) বিনিয়োগ থেকে সরিয়ে দুর্নীতিগ্রস্ত মধ্যস্বত্বভোগীদের পকেটে নিয়ে যায়। এটি তাদের দারিদ্র্যকে দীর্ঘস্থায়ী করে এবং সম্মিলিত পদক্ষেপকে বাধাগ্রস্ত করে , কারণ ব্যক্তিগত টিকে থাকাকে পদ্ধতিগত শোষণকে চ্যালেঞ্জ করার চেয়ে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়। এটি দুর্বল আইনের শাসন এবং প্রোথিত অনানুষ্ঠানিক ক্ষমতার লক্ষণ।

গ. বৈষম্যের ভার
প্রান্তিক গোষ্ঠীগুলো, বিশেষ করে যারা বিচ্ছিন্ন ভূমিতে বা নির্দিষ্ট পরিচয় নিয়ে বসবাস করে (যেমন দলিত, জাতিগত সম্প্রদায়), সামাজিক কলঙ্কের শিকার হয় । একটি বৈষম্যবিরোধী আইনের অভাবে প্রান্তিক গোষ্ঠীগুলোর জন্য মামলা করা বা বিচার চাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে । তারা প্রায়শই নাগরিক অধিকার সম্পর্কে সচেতনতার অভাবে তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত হয় । জাতিগত সম্প্রদায়গুলো বিচার পায় না এবং ভূমি দখল ও উচ্ছেদের শিকার হয় । প্রান্তিক নারীরা মজুরি বৈষম্য, অতিরিক্ত কাজের সময় এবং শারীরিক/মানসিক নির্যাতনের শিকার হন । পরিষেবা প্রদানকারীরা মাঝে মাঝে নেতিবাচক মনোভাব দেখায়, পরিষেবা প্রাপ্তি অস্বীকার বা বাধাগ্রস্ত করে ।

জলবায়ু পরিবর্তন কেবল একটি পরিবেশগত হুমকি নয়, এটি শহুরে প্রান্তিকতার একটি গুরুত্বপূর্ণ চালিকাশক্তি। নদী ভাঙন এবং দারিদ্র্যের কারণে গ্রামীণ এলাকা থেকে ঢাকায় অভিবাসন বৃদ্ধি পায় । লবণাক্ততা এবং কম বৃষ্টিপাতের কারণে জাতিগত সম্প্রদায়ের কৃষিভিত্তিক জীবিকা প্রভাবিত হয় । এটি গ্রামীণ দারিদ্র্যকে আরও বাড়িয়ে তোলে, জলবায়ু অভিবাসীদের ইতিমধ্যেই অতিরিক্ত জনবসতিপূর্ণ এবং অনুন্নত শহুরে বস্তিগুলোতে ঠেলে দেয়, সম্পদের উপর চাপ বাড়ায় এবং শহুরে দরিদ্র জনসংখ্যা বৃদ্ধি করে । এটি পরিবেশগত অবক্ষয় এবং শহুরে সামাজিক দুর্বলতার মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ, প্রায়শই উপেক্ষিত, কার্যকারণ সম্পর্ক তুলে ধরে।

স্বপ্ন স্থগিত: আকাঙ্ক্ষা বনাম বাধা
ক. আশার বীজ: শিক্ষা, সুযোগ এবং একটি উন্নত ভবিষ্যৎ ঃ
ঢাকার শহুরে বস্তিগুলোতে বসবাসকারী কিশোর-কিশোরী এবং তাদের বাবা-মায়েদের "উচ্চ শিক্ষাগত ও পেশাগত আকাঙ্ক্ষা" রয়েছে । পিতামাতার সমর্থন ভর্তি এবং আকাঙ্ক্ষার একটি মূল ভবিষ্যদ্বাণীকারী । গ্রাম থেকে আসা নতুন মুখগুলো "আশায় ভরা চোখে, সংগ্রামের গল্প নিয়ে" আসে , কাজের প্রতিশ্রুতি এবং একটি উন্নত জীবনের আশায় ।

খ. বাস্তবতার নিষ্পেষণ
আকাঙ্ক্ষা থাকা সত্ত্বেও, অপর্যাপ্ত অবকাঠামো, শহরে একীভূতকরণের অভাব, সম্প্রদায়ের অস্থিরতা এবং কম পারিবারিক আয়ের মতো কারণগুলো শিক্ষাগত অর্জনকে বাধাগ্রস্ত করে । শিশুরা উচ্চ মাত্রার অপুষ্টি, স্কুল থেকে ঝরে পড়া এবং শিশুশ্রমের শিকার হয় । শিক্ষক এবং সহপাঠীদের কাছ থেকে বৈষম্য দলিত এবং আদিবাসী শিক্ষার্থীদের শিক্ষাকে বাধাগ্রস্ত করে ।

কাজের প্রতিশ্রুতি প্রায়শই অনিশ্চিত, স্বল্প মজুরির চাকরিতে পরিণত হয়, যা পরিবারগুলোকে শিশুদের কাজ করতে পাঠাতে বাধ্য করে । মোহাম্মদ আবুল কালামের গল্প এর একটি উদাহরণ; নদী ভাঙন এবং ঋণের কারণে বিধ্বস্ত গ্রামীণ ভোলা থেকে ঢাকার বস্তিতে তার যাত্রা টিকে থাকার জন্য মরিয়া অভিবাসনের চিত্র তুলে ধরে । তার প্রাথমিক কারখানার কাজ, এরপর অনিয়মিত ভাঙার কাজ, অবশেষে তার কিশোরী মেয়েদের স্বল্প মজুরির পোশাক কারখানার কাজে ঠেলে দেয়, যা তাদের শিক্ষার বলিদান করে – এটি তার "সবচেয়ে বড় ক্ষতি" । তার গল্প পরিবারগুলোর বেদনাদায়ক আপসকে তুলে ধরে।

এমনকি আনুষ্ঠানিক রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতার প্রকল্পগুলোতেও বাসিন্দারা রাজনৈতিক অন্তর্ভুক্তিতে বাধার সম্মুখীন হন । শহুরে দরিদ্রদের প্রায়শই রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার করা হয় , কিন্তু ভয়, অস্থায়ীতা এবং নাগরিকত্বের পরিচয়ের অভাবে তারা তাদের অধিকার দাবি করার জন্য একত্রিত হয় না ।

গ. ছায়া থেকে কণ্ঠস্বর: ব্যক্তিগত যাত্রা
মোহাম্মদ আবুল কালামের আত্মত্যাগ ও টিকে থাকার গল্পটি গভীর তাৎপর্য বহন করে। নদী ভাঙন ও ঋণের কারণে বিধ্বস্ত গ্রামীণ ভোলা থেকে ঢাকার বস্তিতে তার যাত্রা টিকে থাকার জন্য মরিয়া অভিবাসনের চিত্র তুলে ধরে । তার প্রাথমিক কারখানার কাজ, এরপর অনিয়মিত ভাঙার কাজ, অবশেষে তার কিশোরী মেয়েদের ন্যূনতম মজুরির নিচে পোশাক কারখানার কাজে ঠেলে দেয়, যার ফলে তাদের শিক্ষার বলিদান হয়—এটি তার "সবচেয়ে বড় ক্ষতি" । তার গল্প পরিবারগুলোর বেদনাদায়ক আপসকে তুলে ধরে, যেখানে তাৎক্ষণিক টিকে থাকার প্রয়োজন দীর্ঘমেয়াদী স্বপ্নকে গ্রাস করে।

পিটারের রায়াবাজার বস্তিতে বর্ষাকালে কাটানো সময়ের বর্ণনা দৈনন্দিন জীবনের শারীরিক চ্যালেঞ্জগুলো তুলে ধরে—রাস্তাগুলো নদীতে পরিণত হওয়া, রিকশা কাদায় আটকে যাওয়া, ভঙ্গুর ঘরবাড়ি । মৌলিক প্রয়োজনের জন্য অবিরাম সংগ্রাম এবং আগুন লাগার বা দুর্ঘটনার (রেললাইনের কাছে শিশুদের) সর্বব্যাপী হুমকি জীবনের অনিশ্চয়তাকে আরও বাড়িয়ে তোলে।

"হারিয়ে যাওয়া স্বপ্ন" কেবল ব্যক্তিগত ব্যর্থতা নয়, এটি একটি আন্তঃপ্রজন্মীয় চক্র। বাবা-মায়েরা তাদের সন্তানদের জন্য উচ্চাকাঙ্ক্ষা পোষণ করলেও, প্রায়শই তাৎক্ষণিক টিকে থাকার প্রয়োজনে তাদের স্কুল থেকে বের করে এনে শোষণমূলক শ্রমে নিযুক্ত করতে বাধ্য হন। এটি দারিদ্র্যকে দীর্ঘস্থায়ী করে এবং ভবিষ্যতের সুযোগ সীমিত করে, কার্যকরভাবে পরবর্তী প্রজন্মের স্বপ্নগুলোকে সম্পূর্ণভাবে গঠিত হওয়ার আগেই "হারিয়ে" ফেলে।

বস্তুগত বঞ্চনার বাইরে, উচ্ছেদ, শোষণ এবং জীবিকার অবৈধতার ক্রমাগত হুমকি একটি গভীর মানসিক বোঝা চাপিয়ে দেয়। এই ব্যাপক অনিশ্চয়তা সম্ভবত দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা, শিক্ষায় বিনিয়োগ এবং আকাঙ্ক্ষা পূরণের পথকে রুদ্ধ করে দেয়, কারণ তাৎক্ষণিক টিকে থাকাই সমস্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের উপর প্রাধান্য বিস্তার করে। "হারিয়ে যাওয়া স্বপ্ন" কেবল অপূর্ণ লক্ষ্য নয়, বরং দীর্ঘস্থায়ী চাপ এবং অস্থিরতার কারণে প্রায়শই অপূরণীয় লক্ষ্য।

একটি আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক ঢাকার দিকে: উদ্যোগ এবং ভবিষ্যতের পথ
ক. সরকারের ভূমিকা: নীতি ও কর্মসূচি
বাংলাদেশের সংবিধান সমতা ও বৈষম্যহীনতার অঙ্গীকার করে । বাংলাদেশ জাতিসংঘের টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (SDG) পূরণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যার মধ্যে প্রান্তিক মানুষের ক্ষমতায়নের জন্য লক্ষ্য ১০.২ অন্তর্ভুক্ত । অন্তর্বর্তী সরকার প্রান্তিক গোষ্ঠীগুলোর জন্য কর্মসংস্থান বাড়াতে একটি ডেটা-চালিত শ্রম বাজার কৌশল গ্রহণ করেছে, যেখানে উদ্যোক্তা সহায়তার জন্য বাজেটে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি (২০২৫-২৬ অর্থবছরে ৩৬.৮৩%) হয়েছে ।

প্রগতি (ProGRESS), ইএআরএন (EARN), নারী উদ্যোক্তা তহবিল, গ্রামীণ মা কেন্দ্র কর্মসূচি, ভিডব্লিউবি (VWB) এবং ভিক্ষাবৃত্তিতে নিযুক্ত ব্যক্তিদের পুনর্বাসন কর্মসূচির মতো উদ্যোগগুলো অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তি, দক্ষতা উন্নয়ন এবং সামাজিক সুরক্ষার লক্ষ্য রাখে । পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশন (PKSF) এনরিচ (ENRICH) এবং জাগরণ (Jagoron) এর মতো কর্মসূচির মাধ্যমে ১.৯৯৬ কোটি দরিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত মানুষকে সহায়তা করে, যা বহুমাত্রিক দারিদ্র্য মোকাবেলা এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টি করে ।

তবে, নীতি থাকা সত্ত্বেও, দুর্নীতি (ঘুষ, বেআইনি অর্থ লেনদেন) প্রান্তিক জনগোষ্ঠীকে অসামঞ্জস্যপূর্ণভাবে প্রভাবিত করে । সচেতনতার অভাব, জটিল প্রক্রিয়া এবং পরিষেবা প্রদানকারীদের নেতিবাচক মনোভাব পরিষেবা প্রাপ্তিতে বাধা সৃষ্টি করে । নীতি এবং মাঠ পর্যায়ের বাস্তবতার মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য ব্যবধান রয়েছে ।

সংবিধানের অঙ্গীকার এবং এসডিজি লক্ষ্যমাত্রা থাকা সত্ত্বেও, এবং বাজেটে উল্লেখযোগ্য বরাদ্দ ও নতুন কৌশল গ্রহণ সত্ত্বেও, বাস্তবে ব্যাপক দুর্নীতি, পদ্ধতিগত বৈষম্য এবং মাঠ পর্যায়ে জবাবদিহিতার অভাব লক্ষ্য করা যায়। এই ব্যবধান মূলত দুর্নীতি, পদ্ধতিগত বৈষম্য এবং মাঠ পর্যায়ে জবাবদিহিতার অভাব দ্বারা চালিত হয়, যা সুচিন্তিত নীতিগুলোকে তাদের লক্ষ্যবস্তু মানুষের জন্য অকার্যকর করে তোলে। চ্যালেঞ্জ কেবল নীতি প্রণয়নে নয়, বরং তা নিশ্চিত করা যে পরিষেবাগুলো ন্যায়সঙ্গত এবং দুর্নীতিমুক্তভাবে বিতরণ করা হয়।

খ. সুশীল সমাজ এবং সম্প্রদায়-নেতৃত্বাধীন পদক্ষেপ
সরকারের অবহেলার কারণে সৃষ্ট পরিষেবা ব্যবধান পূরণে বেসরকারি সংস্থাগুলো (NGO) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, যেমন পানি, স্যানিটেশন, আবাসন, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা, সঞ্চয় এবং ক্ষুদ্রঋণ কর্মসূচি সরবরাহ করে । কোয়ালিশন ফর দ্য আরবান পুওর (CUP), ৮০টিরও বেশি এনজিওর একটি নেটওয়ার্ক, বাসস্থান অধিকার, নাগরিক সুবিধা (পানি, স্যানিটেশন, স্বাস্থ্যবিধি), দারিদ্র্য বিমোচন এবং সিবিওগুলির (CBOs) সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য কাজ করে । তারা নীতিগত অ্যাডভোকেসি এবং সম্পদ সংগ্রহে জড়িত ।

এনজিও-প্রবর্তিত সিবিওগুলো, যেমন দুঃস্থ স্বাস্থ্য কেন্দ্র (DSK) এবং ওয়াটারএইড বাংলাদেশের উদ্যোগে গঠিত নগর বস্তিবাসী উন্নয়ন সংস্থা (NBUS), ভূমি অধিকার, আবাসন এবং মৌলিক পরিষেবা (পানি সংযোগ, স্যানিটেশন চেম্বার, স্বল্প খরচের ঘর) এর উপর মনোযোগ দেয় । তারা স্থানীয় জ্ঞান ব্যবহার করে এবং বাসিন্দাদের একত্রিত করে। তাদের অর্জনগুলোর মধ্যে রয়েছে বস্তিতে উচ্ছেদ প্রতিরোধ, আইনি পানি সংযোগের জন্য সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর এবং সিবিওগুলোর মধ্যে ঐক্য সৃষ্টি ।

তবে, এনজিও/সিবিওগুলোর চ্যালেঞ্জও রয়েছে: নেতৃত্ব সংকট, দাতাদের উপর অর্থায়নের নির্ভরতা, স্থানীয় বৈধতার অভাব এবং সমন্বয়হীনতা । অনেক এনজিও ভূমি অধিকারের মতো বিতর্কিত বিষয়গুলো এড়িয়ে চলে, যা দীর্ঘমেয়াদী স্থিতিশীলতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । সিবিওগুলোর মধ্যে তহবিল পাওয়ার প্রতিযোগিতা একটি সমস্যা হতে পারে।

এনজিওগুলো তাৎক্ষণিক ত্রাণ ও পরিষেবা প্রদানে অপরিহার্য হলেও, তাদের বর্তমান কার্যপ্রণালী প্রায়শই তাদের পদ্ধতিগত, অধিকার-ভিত্তিক পরিবর্তনের চালিকাশক্তি হিসেবে নয়, বরং অস্থায়ী সমাধান হিসেবে posicion করে। দাতাদের তহবিলের উপর তাদের নির্ভরতা এবং রাজনৈতিকভাবে সংবেদনশীল বিষয়গুলো (যেমন সুরক্ষিত ভূমি অধিকার, যা স্থিতিশীলতার জন্য মৌলিক) এড়িয়ে চলা মানে তারা মূল কারণের পরিবর্তে লক্ষণগুলোর সমাধান করে, যা প্রকৃত ক্ষমতায়ন এবং স্বনির্ভরতা বৃদ্ধির পরিবর্তে নির্ভরতার চক্রকে দীর্ঘস্থায়ী করতে পারে।

গ. স্বপ্ন পুনরুদ্ধারের সুপারিশ
নীতি সংস্কার ও প্রয়োগ: বৈষম্যবিরোধী আইন প্রণয়ন ও প্রয়োগ করা । অনানুষ্ঠানিক কাজকে আনুষ্ঠানিক করা এবং সামাজিক সুরক্ষা বাড়ানো । পরিকল্পনা পর্যায়ে অধিকারকে অগ্রাধিকার দেওয়া ।

উন্নত পরিষেবা বিতরণ: শহুরে পরিকল্পনা ও অবকাঠামো উন্নত করা । বিশুদ্ধ পানি, স্যানিটেশন এবং স্বাস্থ্যসেবার ন্যায়সঙ্গত প্রবেশাধিকার নিশ্চিত করা । প্রান্তিক-বান্ধব অভিযোগ নিষ্পত্তি ব্যবস্থা স্থাপন করা ।

ক্ষমতায়ন ও অংশগ্রহণ: দক্ষতা উন্নয়ন ও উদ্যোক্তাকে উৎসাহিত করা । সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী সংস্থাগুলোতে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা । সম্প্রদায়-নেতৃত্বাধীন উদ্যোগগুলোকে উৎসাহিত করা এবং সিবিওগুলোকে শক্তিশালী করা ।

দুর্নীতি ও বৈষম্য মোকাবেলা: পরিষেবা প্রদানকারীদের মানসিকতা পরিবর্তনের জন্য প্রশিক্ষণ দেওয়া । সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচিতে সুবিধাভোগী নির্বাচনে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা । সামাজিক কলঙ্ক দূর করা ।

সমন্বিত পদ্ধতি: সরকার ও এনজিওগুলোর মধ্যে সমন্বয় সাধন করা । জলবায়ু-প্ররোচিত বাস্তুচ্যুতি মোকাবেলা করা এবং জলবায়ু অভিবাসীদের জন্য সহায়তা প্রদান করা।

শহরের হৃদয়ে আশার পুনরুজ্জীবন ঃ
ঢাকার প্রান্তিক লক্ষ লক্ষ মানুষের "বলা না হওয়া গল্প" তাদের গভীর চ্যালেঞ্জের মধ্যেও স্থিতিস্থাপকতার এক প্রমাণ। তাদের হারিয়ে যাওয়া স্বপ্ন কেবল ব্যক্তিগত ট্র্যাজেডি নয়, বরং শহুরে শাসন, সামাজিক অন্তর্ভুক্তি এবং ন্যায়সঙ্গত উন্নয়নের পদ্ধতিগত ব্যর্থতার লক্ষণ। এই সমস্যা মোকাবেলায় একটি বহু-মাত্রিক, সমন্বিত পদ্ধতির প্রয়োজন—যা অস্থায়ী সমাধান ছাড়িয়ে ভূমি অধিকার সুরক্ষিত করা, সম্মানজনক জীবিকা নিশ্চিত করা, বৈষম্যমূলক অনুশীলন দূর করা এবং সম্প্রদায়গুলোকে তাদের অধিকার দাবি করার জন্য ক্ষমতায়ন করবে।

এই প্রতিবেদনে দেখানো হয়েছে যে প্রান্তিক জনগোষ্ঠী মূলত "টিকে থাকার কৌশল" এর উপর নির্ভরশীল। প্রতিবাদের অভাব এবং অধিকারের পরিবর্তে আলোচনার উপর জোর দেওয়া একটি পুনরাবৃত্ত থিম। ঢাকার প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য চূড়ান্ত লক্ষ্য কেবল "টিকে থাকা" থেকে তাদের "শহরের অধিকার" (Right to the City) সম্পূর্ণরূপে উপলব্ধি করার দিকে সরে আসা উচিত। এর মধ্যে কেবল মৌলিক পরিষেবা প্রদান নয়, বরং ক্ষমতা গতিশীলতার মৌলিক পরিবর্তনও জড়িত, যা তাদের অনিশ্চিত, অবৈধ জীবিকায় ঠেলে দেয় এবং সম্মিলিত পদক্ষেপকে বাধাগ্রস্ত করে। স্বপ্নকে পুনরুজ্জীবিত করার অর্থ হল এমন একটি কাঠামো তৈরি করা যেখানে অধিকারগুলি সহজাত, আলোচনার বিষয় নয়।

একটি সত্যিকারের অন্তর্ভুক্তিমূলক ঢাকা গড়ে তোলার জন্য সরকার, সুশীল সমাজ এবং নাগরিকদের সম্মিলিত দায়িত্ব রয়েছে, যেখানে প্রতিটি স্বপ্ন, সামাজিক অবস্থান নির্বিশেষে, বিকশিত হওয়ার সুযোগ পায়। শহরের প্রকৃত অগ্রগতি তার সকল বাসিন্দার কল্যাণের উপর নির্ভর করে।

📢 প্রিয় পাঠক,

এই শহরের কোলাহলে ঢাকা পড়ে আছে অসংখ্য হারানো স্বপ্ন, অবহেলিত মানুষজনের গোপন কষ্ট। তাদের যন্ত্রণার কাব্য কখনো কেউ শুনতে চায়নি, কিংবা আমরা হয়তো অজান্তেই চোখ ফিরিয়েছি। আজ আমি আপনাদের সেই নিঃশব্দ কাহিনী বলার চেষ্টা করছি—যে গল্পগুলো বলা হয়নি, শুনা হয়নি।

আসুন, আমরা সবাই এক মুহূর্ত থেমে ভাবি, তাদের বেদনায় নিজেদের জায়গা খুঁজে পাই, আর তাদের জন্য সহানুভূতি ও ভালোবাসার হাত বাড়াই। কারণ সত্যিই, মানবতা মানে একে অপরের কষ্টে পাশে দাঁড়ানো।

আপনি যদি এই গল্পগুলো আপনার হৃদয় স্পর্শ করে, তাহলে দয়া করে এগুলো আপনার বন্ধু, পরিবার এবং সমাজের সঙ্গে শেয়ার করুন। কারণ কখনো এককথা, একছোঁয়া অনুভূতি বদলে দিতে পারে অনেকের জীবন। আপনার শেয়ার হতে পারে তাদের জন্য আলো, আশা এবং নতুন জীবনের শুরু।

আপনাদের ভালোবাসা ও সহযোগিতাই আমাদের সাহস জোগায় এগিয়ে যেতে। অনেক ধন্যবাদ।

কল্পকথা ৩৬০

"কল্পনা যেখানে জীবনের গল্প বলে…" Kalpakatha 360 কেবল একটি ব্লগ নয়, এটি অনুভবের এক পূর্ণচক্র। জীবনের প্রতিটি দিক—ভালোবাসা, বিচ্ছেদ, নস্টালজিয়া, সমাজ, আত্মউপলব্ধি—এই ব্লগে গল্প হয়ে ধরা দেয় শব্দের ভাষায়। আমরা বিশ্বাস করি, প্রতিটি মানুষের ভেতরেই লুকিয়ে আছে একটি কল্পকথা—কারওটা বলা হয়, কারওটা থেকে যায় না বলা। সেই অনুচ্চারিত গল্পগুলোই এখানে খুঁজে পায় কণ্ঠ। এই ব্লগে আপনি পাবেন: ছোটগল্প ও জীবনভিত্তিক উপন্যাস কবিতা ও ছন্দে বাঁধা অনুভূতি সমাজ সচেতন প্রবন্ধ ও বিশ্লেষণ আত্মউপলব্ধি, নৈতিকতা ও আধ্যাত্মিক চিন্তাধারা সময়োপযোগী ভাবনা ও লেখকদের মুক্ত মত প্রকাশ আমরা চাই—আপনি হোন আমাদের পাঠক, সহচর, অথবা গল্পকার। কারণ "Kalpakatha 360" শুধু আমাদের কথা বলে না, এটি আমাদের সকলের কল্পনাকে ছুঁয়ে যায়।

Post a Comment

🌸 আপনার মন্তব্যের জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ!
আপনার মতামত আমাদের অনুপ্রাণিত করে এবং আগামীতে আরও মানসম্পন্ন কনটেন্ট তৈরিতে সহায়তা করে।
আপনি যদি কোনো নির্দিষ্ট বিষয় বা গল্প পছন্দ করে থাকেন, জানালে ভালো লাগবে।
নিয়মিত পাশে থাকুন — আপনার সহযোগিতা ও ভালোবাসাই আমাদের এগিয়ে চলার শক্তি।

শুভ কামনায়,
✍️ কল্পকথা-৩৬০ ব্লগ টিম
https://kalpakatha360.blogspot.com

Previous Post Next Post